গোমতী প্রতিদিন ডেক্স:
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু এর আগে বিএনপির মনোনয়ন পেয়ে এককভাবে নির্বাচন করলেও এবার নিজাম উদ্দিন কায়সার তার মুখোমুখি হয়েছেন; দুজনই বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত একক প্রার্থী হলেও দলে তার ‘বিরোধী রয়েছে’ বলে ভোটারদের বিশ্বাস।
পাঁচ মেয়র পদপ্রার্থীর বাইরে স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন আওয়ামী লীগের মাসুদ পারভেজ খান ইমরান। দলীয় নির্দেশনায় তিনি বৃহস্পতিবার প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।
ইমরান সরে দাঁড়ানোয় ভোটের মাঠে দলীয়ভাবে কিছুটা ‘সুবিধাজনক’ অবস্থায় রয়েছেন আওয়ামী লীগে প্রার্থী দলের কুমিল্লা মহানগর সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক রিফাত। দলের প্রতীক ‘নৌকা’ নিয়ে প্রচারও শুরু করেছেন।
রিফাতের প্রতিদ্বন্দ্বী সদ্য সাবেক মেয়র স্বতন্ত্র মনিরুল হক সাক্কু ও আরেক স্বতন্ত্র নিজাম উদ্দিন কায়সার দুজনই বিএনপিপন্থী নেতা। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচন করায় এরইমধ্যে দুজনকেই দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
‘টেবিল ঘড়ি’ প্রতীকে সাক্কু এবং ‘ঘোড়া’ প্রতীক নিয়ে কায়সার কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে প্রচার ও গণংসযোগে নেমে পড়েছেন।
এই তিনজন ছাড়াও ‘হাতপাখা’ নিয়ে মেয়র পদে দাঁড়িয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের রাশেদুল ইসলাম এবং ‘হরিণ’ মার্কায় কুমিল্লা নাগরিক ফোরামের সভাপতি কামরুল আহসান বাবুল।
নগরীর ছোটরা এলাকার ভোটার মাহাবুবুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ইমরান নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর কারণে রিফাতের এখন এ নিয়ে চিন্তা নেই। তবে সাক্কু ও কায়সার দুজনেই হেভিওয়েট।”
এই ভোটার আরও বলেন, সাক্কু দুবারের মেয়র হওয়ার সুবাদে তার নিজস্ব কিছু ভোট আছে। আর কায়সার হলেন কুমিল্লার বিএনপির মূলধারার নিয়ন্ত্রক জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাজী আমিনুর রশিদ ইয়াসিনের শ্যালক।
“তাই কোনো প্রার্থীকে দুর্বল ভাবার সুযোগ নেই। নির্বাচনে এই তিন প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।”
ঠাকুরপাড়ার বাসিন্দা এমরান হোসেন বলেন, রিফাতের বিরুদ্ধে দলের মধ্যে এখন প্রকাশ্যে কোনো বিরোধী নেই। তবে দলের একটি অংশ তার ‘বিরুদ্ধে’ থাকায় আওয়ামী লীগের কিছু ভোট অন্য প্রার্থীদের মধ্যে ভাগ হয়ে যাবে।
এই ভোটার রিফাত, সাক্কু আর কায়সার তিনজনকেই শক্তিশালী বলে মন্তব্য করেন।
ইকবাল হোসেন, নগরীর চর্থা এলাকার এই বাসিন্দারও ধারণা ভোটের লড়াই ‘ত্রিমুখী’ হবে।
ইকবালের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, ” গত দু’টি নির্বাচনে সাক্কু ছাড়া বিএনপির কোনো প্রার্থী ছিল না; যার কারণে সাক্কু একচেটিয়া বিএনপির সব ভোট পেয়েছেন। এবার বিএনপির ভোট দুই ভাগ হয়ে যাওয়ার কারণে সাক্কু ও কায়সারকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে।”
আর বিদ্রোহী ইমরান মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী রিফারের অবস্থান মাঠে এখন কিছছুটা ভালো।
নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোয় ইমরানকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন নৌকার প্রার্থী রিফাত।
ক্ষমতাসীন দলের এই প্রার্থী বলেন, ” ইমরানও দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। এজন্য আমি তাকে ধন্যবাদ জানাই। আশা করছি ১৫ জুন বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে নৌকার বিজয় উপহার দিতে পারব। ”
বিএনপিপন্থী স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মো. মনিরুল হক সাক্কুর বিশ্বাস জনগণ তাকেই আবারও নগরপিতা হিসেবে বেছে নেবেন।
“গত ১০ বছর মেয়র হিসেবে মানুষের জন্য কাজ করেছি। মানুষ আমাকে ভালোবাসে, আমিও তাদের ভালোবাসি। আশা করছি এবারও জনগণ আমার পক্ষে রায় দেবেন।”
Leave a Reply