গোমতী প্রতিদিন ডেক্স:
রাজনীতিকে নিয়ে লিখতে গিয়ে কবি আবুল হাসান লিখেছিলেন—আমি পকেটে দুর্ভিক্ষ নিয়ে একা একা অভাবের রক্তের রাস্তায় ঘুরছি/ জীবনের অস্তিত্বে ক্ষুধায় মরছি রাজনীতি/ তাও রাজনীতি আর/ বেদনার বিষ বাক্সে জর্জরিত এখন সবার/ চতুর্দিকে খাঁ, খাঁ, খল/ তীব্র এক বেদেনীর সাপ খেলা দেখছি আমি/ রাজনীতি তাও কি রাজনীতি!
রাজনীতি বিষয়ে এমন শত শত নেতিবাচক কথা থাকলেও রাজনীতির সংস্পর্শ ছাড়া আমরা থাকতে পারি কি? কোনো না কোনো রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে আমরা যুক্ত হয়েই যাই। নির্বাচন তেমনি একটি প্রক্রিয়া। এর সঙ্গে সাধারণের চাওয়া আর পাওয়ার হিসাব থাকে, থাকে নানান সমীকরণের খেলা।
এই ধারাবাহিকতায় কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, রাজনৈতিক দলগুলোও তত বেশি হিসাব-নিকাশের খাতা খুলে বসেছেন। বিশেষ করে বড় দুই দলের জন্য এটি আগামী সংসদ নির্বাচনের ড্রেস রিহার্সাল।
তাই আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সেই অনুযায়ী তাদের রণকৌশল নির্ধারণ করছেন। যদিও বিএনপি নির্বাচন বর্জনের কথা বলছে; কিন্তু মাঠের চিত্র ভিন্ন। নবগঠিত নির্বাচন কমিশনের অধীনে এটি প্রথম নির্বাচন। তাদের জন্যও অগ্নিপরীক্ষা বটে। গোটা দেশবাসীর দৃষ্টি এখন কুমিল্লা সিটি করপোরেশনে নিবদ্ধ। শুধু স্থানীয় নির্বাচন নয়, জাতীয় রাজনীতিতেও এ নির্বাচন হতে পারে টার্নিং পয়েন্ট।
বিএনপি নেতা বর্তমান মেয়র মনিরুল হক দীর্ঘ দিন এই নগরের মেয়রের দায়িত্ব পালন করলেও নিজ দলীয় রাজনীতিতে অনেকটাই নিষ্ক্রিয় ছিলেন। সরকারি দলের সঙ্গে সুসম্পর্কের কারণে শেষের দিকে দলে অনেকটা নিষ্প্রভ হয়ে পড়েছিলেন তিনি।
দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে তিনি পুনরায় প্রার্থী হলে তাঁর দল তাকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করে। পক্ষান্তরে স্থানীয় রাজনীতিতে মনিরুল হকের প্রবল প্রতিপক্ষ আমিনুর রশীদের অনুসারী নিজামউদ্দিনের নির্বাচনে অংশগ্রহণ তাঁকে আরও কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে।
স্থানীয় সংসদ সদস্যের অনুসারী কেউ মনোনয়ন পেলে তিনি নির্বাচনে অংশ নেবেন কি না, তা নিয়েও ব্যাপক গুঞ্জন ছিল। কিন্তু সবকিছু পেছনে ফেলে তিনি নির্বাচনের মাঠে প্রবল ভাবেই আছেন।
সব বৈরিতা মোকাবিলা করে তিনি যদি তৃতীয়বারের মতো নির্বাচনে জিতে যান, তাহলে স্থানীয় বিএনপির রাজনীতিতে তাঁর অবস্থান সুসংহত হবে, এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না।
Leave a Reply