গোমতী প্রতিদিন ডেক্স :
হাটহাজারী হতে ৯ম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত ১৫ বছরের নাবালিকা মেয়েকে অপহরণ: অপহৃত ভিকটিম উদ্ধারসহ অপহরণকারীদের আটক করেছে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম।
বাংলাদেশ আমার অহংকার” এই স্লোগান নিয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোড়ালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাব সৃষ্টিকাল থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। র্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্ধষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগনের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
অপহৃত ভিকটিম ১৫ বছর বয়সের এবং ৯ম শ্রেণীতে পড়ুয়া একজন ছাত্রী। আসামী মোঃ মোদাসসির বিভিন্ন সময়ে ভিকটিমকে মাদ্রাসায় আসা যাওয়ার পথে প্রেমের প্রস্তাব দিত এবং বিরক্ত করত। ভিকটিম বিষয়টি তার মা ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরকে জানায়। ভিকটিমের বাবা প্রবাসী হওয়ায় অভিভাবক হিসাবে ভিকটিমের মা তার মেয়েকে বিরক্ত না করার জন্য মোদাসসিরকে অনুরোধ করেন। ভিকটিমের মা ও তার পরিবারের লোকজন লোক লজ্জার ভয়ে উক্ত বিষয়ে আর কোন ওজর আপত্তি কিংবা স্থানীয় সালিশ বিচার না করে তার মেয়েকে নিজ দায়িত্বে মাদ্রাসায় যাতায়াত করতে দিত। গত ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ খ্রিঃ তারিখ রাত অনুমান ০৯০০ ঘটিকায় ভিকটিমদের বাড়িতে বিদ্যুৎ না থাকায় ভিকটিম ঘর হইতে বের হয়ে উঠানে যায়। তারপর হতে ভিকটিম ঘরে না আসায় তার মা ও তার পরিবারের লোকজন আশ-পাশে খোঁজাখুঁজি করে কোথাও না পেয়ে পরদিন ভিকটিমের মা হাটহাজারী মডেল থানায় নিখোজ সংক্রান্তে একটি জিডি করেন যার জিডি নং-১৩৭৭, তারিখ-২০ সেপ্টেম্বর ২০২২ইং এবং তার মেয়েকে খোঁজাখুঁজি অব্যহত রাখেন।
ভিকটিমের মা ভিকটিমকে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে জানতে পারেন যে, গত ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ খ্রিঃ তারিখ রাত অনুমান ০৯০০ ঘটিকার সময় ভিকটিম ঘর হতে বের হয়ে উঠানে পায়চারি করার সময় হঠাৎ আসামী মোদাসসির অজ্ঞাতনামা ২/৩ জনের সহযোগিতায় তার মেয়েকে জোর পূর্বক টানা হেচড়া করতঃ রাস্তার উপর নিয়ে একটি সিএনজি গাড়ীতে করে অপহরণ করতঃ দ্রুত ঘটনাস্থল হতে চলে যায়। বিষয়টি জানার পর ভিকটিমের মা মোদাসসির এর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে ফোন করে তার মেয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে আসামী তার মেয়েকে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায় বলে স্বীকার করে। পরবর্তীতে এ ঘটনায় ভিকটিমের মা আসামী মোদাসসির এবং অজ্ঞাতনামা আরও ২/৩জনকে আসামী করে হাটহাজারী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন যার মামলা নং-৩৫ তারিখ-২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ ইং ধারা- নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০(সংশোধনী-২০০৩) ৭/৩০ এবং বিষয়টি র্যাব-৭, চট্টগ্রামকে অবহিত করেন।
র্যাব-৭, চট্টগ্রাম ভিকটিমকে উদ্ধার এবং অপহরনের সাথে জড়িত আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারী অব্যাহত রাখে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ০৪ অক্টোবর ২০২২ খ্রিঃ তারিখ দুপুর অনুমান ১২৩০ ঘটিকায় চট্টগ্রাম মহানগরীর পতেঙ্গা থানাধীন নাজিরপাড়া এলাকার একটি বাসা হতে উক্ত অপহরণের সাথে জড়িত আসামী ১। মোঃ মোদাসসির(২৫), পিতা-রেজাউল করিম, সাং-আমিরপাড়া, থানা-বাঁশখালী, থানা-হাটহাজারী জেলা-চট্টগ্রাম, ২। রেজাউল করিম(৫৩),পিতা-মৃত-আব্দুস সালাম এবং ৩। সাবিহা সুলতানা (৪৫), স্বামী- রেজাউল করিম, উভয়সাং-চনুুয়া, থানা-বাঁশখালী, জেলা-চট্টগ্রামদের আটক এবং অপহৃত ভিকটিমকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
৫। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামী মোদাসসির এবং তার মা ও বাবা স্বীকার করে তারা গত ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ খ্রিঃ তারিখে ভিকটিমকে অপহরণ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেফতার এড়াতে কক্সবাজার জেলার পেকুয়া এবং পরবর্তীতে চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় আত্মগোপন করেছিল। জিজ্ঞাসাবাদে তারা আরও জানায়, গত ০৩ অক্টোবর ২০২২ইং তারিখে তারা কক্সবাজার হতে বাস যোগে এসে চট্টগ্রাম মহানগরীর পতেঙ্গা থানাধীন নাজিরপাড়া এলাকায় একটি বাসায় আত্মগোপন করেছিল এবং ০৪ অক্টোবর ২০২২ইং তারিখে ঐ বাসা হতে অপহৃত ভিকটিমকে নিয়ে গাজীপুরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করার পরিকল্পনা করছিল।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
Leave a Reply