মোঃ শফিকুল ইসলাম চট্টগ্রাম:
র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর অভিযানে চকরিয়া থেকে ধর্ষণ ও নাশকতা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামী মো.তৌহিদুল ইসলাম ফরহাদ (২৮) আটক।
ভুক্তভোগী ভিকটিম একজন সৌদিপ্রবাসীর স্ত্রী। ভিকটিম তার বাড়ির পাশে জনৈক তৌহিদ এর মুদি দোকান থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ক্রয় করতেন। গত জুলাই ২০২১ মাসে ভিকটিম তার বাড়ির পাশের একটি জমি ক্রয় করার জন্য টাকার সংকটে পড়ায় তৌহিদের কাছে ৫০ হাজার টাকা ধার চান। তৌহিদ ভিকটিমকে টাকা ধার দিতে রাজী হয় এবং টাকা নেয়ার জন্য ১৪ জুলাই ২০২১ইং তারিখে চকরিয়ার ওশান সিটি মার্কেটে আসতে বলে। ভিকটিম টাকা নেয়ার জন্য আসলে তৌহিদ জানায় একটি কাগজে সাক্ষর করতে হবে। পরবর্তীতে তৌহিদ ভিকটিমকে উক্ত কাগজ সাক্ষর করার জন্য তৃতীয় তলার আবাসিক হোটেলের একটি কক্ষে নিয়ে যায়। সেখানে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে ভিকটিমকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে এবং হোটেল রুমে বসানো গোপন ক্যামেরায় ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে।
পরবর্তীতে তৌহিদ ধর্ষণের ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে বিভিন্ন সময় ভিকটিমকে বেশ কয়েকবার ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে তৌহিদ ভিকটিমের নিকট মোটা অংকের টাকা দাবি করে কিন্তু ভিকটিম টাকা দিতে অস্বীকার করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তৌহিদ ধর্ষণের ভিডিওচিত্র গত ১৮ আগষ্ট ২০২১ তারিখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়।
উক্ত ঘটনায় বাদী হয়ে ভিকটিম কক্সবাজার জেলার চকোরিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন যার মামলা নং ৪৭/৩৬২ তারিখ ৩১ আগষ্ট ২০২১ইং, ধারা পর্নোগ্রাফী আইন ২০১২ এর ৮(২)৮(৩) তৎসহ নারী ও শিশু নির্যাতন আইন ২০০০ (সংশোধনী/২০০৩) এর ৯(১)। পরবর্তীতে ভিকটিম বর্ণিত বিষয়টি র্যাব-৭, চট্টগ্রামকে অবহিত করে।
উক্ত অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম বর্ণিত ধর্ষণকারীকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারি চালায়। গোয়েন্দা নজরদারির এক পর্যায় র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, বর্ণিত মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামী কক্সবাজার জেলার চকরিয়া থানাধীন বার আউলিয়া নগর এলাকায় অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত ১৭ জুলাই ২০২২ ইং তারিখ ২৩০৫ ঘটিকায় র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল বর্ণিত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামী মো.তৌহিদুল ইসলাম ফরহাদ (২৮), পিতা- জসিম উদ্দিন, সাং- বার আউলিয়ানগর, থানা- চকরিয়া, জেলা- কক্সবাজারকে আটক করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত স্বাক্ষীদের সম্মুখে আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত আসামী উল্লেখিত ঘটনার কথা অকপটে স্বীকার করে।
উল্লেখ্য যে, ধৃত আসামী তৌহিদ এলাকায় একজন চিহ্নিত অপরাধী। সিডিএমএস পর্যালোচনা করে তার বিরুদ্ধে কক্সবাজার জেলার চকরিয়া থানায় ধর্ষণ, নাশকতামূলক কর্মকান্ড এবং বিশেষ ক্ষমতা আইনে ০৫টি মামলা পাওয়া যায়।
গ্রেফতারকৃত আসামীর সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
Leave a Reply