মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ময়নামতি, মোকাম, ভরেল্লা উত্তর ও ভারেল্লা দক্ষিণ ইউনিয়নের জমি গুলোতে সারা বছর ব্যাপকভাবে সবজি চাষ হয়। কথিত আছে, হরতাল হলে রাস্তাও বিশ্রাম পায় কিন্তু এসব এলাকার জমির এক দিনের বিশ্রাম নাই। নিবিড়ভাবে চাষ হওয়া জমিগুলোর মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা ভেবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বুড়িচং এর প্রত্যক্ষ উৎসাহ ও তত্বাবধানে ২০২০ সালে করোনার লক ডাউনের মাঝে কেঁচো সার উৎপাদনের খামার স্থাপন করেন মো. শাহাদৎ হোসেন। বিসমিল্লাহ ভার্মি কম্পোষ্ট নামের খামারটির অবস্থান ময়নামতি ইউনিয়নের নামতলা গ্রামে। শুরুতে একটি সেডে ২০ টি চেম্বার নিয়ে শুরু করেন, বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ টিতে। মাসে ৩ টন কেঁচো সার উৎপাদন করেন। যা থেকে আয় হয় আনুমানিক ৫০ হাজার টাকা।
কৃষি উদ্যোক্তা মো. শাহাদৎ হোসেন জানান, শুরুতে ৮৫ কেজি কেঁচো দিয়ে শুরু করেছিলেন। বর্তমানে আনুমানিক ৫০০ কেজির অধিক কেঁচো রয়েছে, যার বাজার মূল্য ১০০০ টাকা কেজি হিসাবে ৫ লক্ষ টাকা। তবে তিনি কেঁচো বিক্রি করেন না। সম্প্রতি তিনি আরো বড় আকারের নতুন সেডে কেঁচো সার সম্প্রসারণ করেছেন। কেঁচো গুলো তারই লেগে যায়।
তিনি আরো জানান, শুরুতে কেঁচো সারের বিষয়ে এলাকার কৃষকেরা জানতো না। বাজার তৈরি করতে কিছুটা বেগ পেতে হয়েছে। বর্তমানে ১৫ টাকা কেজি দরে কেঁচো সার খামার থেকেই বিক্রি হয়ে যায়। উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে অধিকাংশ সার বিক্রি হয়। তাছাড়া, স্থানীয় কৃষক ও নার্সারীতে নিয়মিত কেঁচো সার সরবরাহ করি। আমার খামারে দুই জন শ্রমিক নিয়মিত কাজ করেন।
খামার ঘুরে দেখা গেল দুইটা সার উৎপাদনের সেড ছাড়াও অপর একটি সেড আছে নতুন গোবরের গ্যাস ছাড়ানো জন্য। এক পাশের চেম্বার গুলোতে তৈরি হচ্ছে কেঁচো সার। অন্য পাশে শ্রমিকেরা কলা গাছ কুঁচি কুঁচি করে কাটছেন কেঁচোর খাবার হিসাবে। পাশেই সরবরাহের জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে আনুমানিক ৫০০ কেজি কেঁচো সার।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত কৃষি অফিসার কৃষিবিদ বানিন রায় জানান, ময়নামতি এলাকায় কেঁচো সারের মূল চ্যালেঞ্জ ছিল বাজার ব্যবস্থাপনা। বর্তমানে আমরা এটি কাটিয়ে উঠতে পেরেছি। টেকসই কৃষির কথা মাথায় রেখে আমরা সকল জৈব সারের ব্যবহারকে অনুপ্রাণিত করি। ইতিমধ্যে বিসমিল্লাহ ভার্মি কম্পোষ্টকে ঘিরে আমাদের পরিকল্পনা সফল হয়েছে। এখন এটি একটি সফল প্রতিষ্ঠান। সামনে প্রতিষ্ঠানটিকে ঘিরে এলাকার কৃষকদের সার ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনতে কিছু নতুন পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
Leave a Reply