মফস্বল সাংবাদিকদের কষ্টের শেষ জীবন
মোহাম্মদ জামশেদ কসবা
(ব্রাক্ষণবাড়িয়া)প্রতিনিধি:
মফস্বল সাংবাদিকরা আলোচনা আর সমালোচনার মধ্যে দিয়ে অতি কষ্ট করে পেশাগত কাজ করে চলেছেন। মফস্বলের সাংবাদিকরা প্রায় সবাই আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল। চিকিৎসার খরচ জোগানোর জন্য কিছু সরকারি অনুদান পাওয়া গেলেও সেগুলো পর্যাপ্ত নয়। আমরা নানা জায়গা থেকে টাকা নিয়ে তাদেরকে সাহায্যের চেষ্টা করি। কিন্তু এভাবে চলবে আর কতদিন?’
সাংবাদিক খ.ম.হারুনুর রশীদ ঢালী। আশির দশকে কুমিল্লা থেকে প্রকাশিষত সাপ্তাহিক আমোদ পত্রিকা কসবার প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করে পান পরিচিতি। পাশাপাশি কাজ করেছেন জাতীয় দৈনিক ও সংবাদভিত্তিক টেলিভিশনে।
বর্তমানে পাক্ষিক অপরাধ পত্র পত্রিকার সম্পাদক প্রকাশ এবং বেসরকারী টেলিভিশন মোহনা টিভিতে কসবা উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছেন এবং অনলাইন টিভি কসবা টিভি তার পরিচালনা পরিচালিত হচ্ছে। তবে প্রায় ৪২ বছরের সাংবাদিকতা জীবনের অনেক ইতিহাস।তার পেশাগত চলার পথে অনেক সাংবাদিক ক্যান্সারসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে দেখেছেন। অনেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে।
আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘আমার জানামতে সারাজীবন সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করেছেন। সকল মানুশের সাথে উঠবস আছে।তিনি গরিবদের সাংবাদিক হিসেবে বেশি পরিচিত।
‘তিনি আর্থিকভাবে তেমন স্বচ্ছল নন। তবে যতটুকু পারে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে দেখেছি। তবে আমার পেশার সুবাদে অনেক দেখেছি। মফস্বল সাংবাদিকদের শেষ জীবনটা খুবই কষ্টের হয়। তারা সারাজীবন কাজ করে যান আর শেষে ধুঁকে ধুঁকে মারা যান। অনেক সহকর্মী এভাবে মারা গেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সারাজীবন কষ্ট করে দেশ ও দশের জন্য কাজ করি আর জীবনের শেষ সময়ও কষ্ট করেই পার করি। মফস্বল সাংবাদিকদের জীবন এমনই হয়। বেঁচে থাকতেও কষ্ট, মৃত্যুর পরও কষ্ট।’
কসবা আখাউড়ার এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কোনো সাংবাদিক বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যাচ্ছে না। সবাই হঠাৎ নানান রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছেন। আসলে মফস্বলের সাংবাদিকরা অমানুষিক পরিশ্রম করেন। তাদের খাওয়াসহ কোনো কিছুর রুটিন থাকে না। এর জন্য তারা কম বয়সে নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। এর সবই হয় শুধু মাত্র সাংবাদিকতার জন্য। মফস্বলের সাংবাদিকরা সারাজীবন দেশের কল্যাণে কষ্ট করেন এবং শেষ জীবনটাও তাদের অনেক কষ্টে যায়।’
কসবা উপজেলা প্রেসক্লাবের আইন বিষয়ক সম্পাদক কবীর হোসেন বলেন, ‘মফস্বলের সাংবাদিকরা প্রায় সবাই আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল। চিকিৎসার খরচ জোগানোর জন্য কিছু সরকারি অনুদান পাওয়া গেলেও সেগুলো পর্যাপ্ত নয়। অনেরক উপজেলায় কোনো অনুদানও পাননি। আমরা নানা জায়গা থেকে টাকা নিয়ে তাদেরকে সাহায্যের চেষ্টা করি। কিন্তু এভাবে আর কতদিন? আমরা ভেবেছিলাম দেশের আইনমন্ত্রীর গ্রামের বাড়ি কসবায়। কসবা ও আখাউড়ার সাংবাদিকদের প্রতি সুদৃষ্টি দিবেন কিন্ত কাজের কাজ কিছুই হয়নি। আইনমন্ত্রীর প্রতি আবেদন আপনার নির্বাচনী এলাকার সাংবাদিকদের প্রতি সুদৃষ্টি দিবেন।তাদের তালিকা করে প্রতি মাসে সিনিয়ন সাংবাদিকদের প্রতি সহযোগিতার হাত প্রসার করার দাবীটি এখন সময়ের দাবী।আর ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি শুধু মাত্র সাংবাদিকদের চিকিৎসার জন্য একটি সরকারি হাসপাতালের ব্যবস্থা করে দিতেন, তাহলে উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করা যেত’এ কথা বলেন কসবা আখাউড়া টেলিভিশ সাংবাদিক ক্লাবের সভাপতি খ.ম.হারুনুর রশীদ ঢালী।
Leave a Reply